সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর অধীন অসদাচরণসমূহ
সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর কোন বিধানের পরিপন্থি আচরণই অসদাচরণ। এইরূপ অসদাচরণের জন্য সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮ এর আওতায় বিভাগীয় মামলা রুজু করে দন্ড আরোপ করা যায়। আচরণ বিধিমালার আওতাধীন অসদারচণসমূহ নিম্নরূপ–
সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-৫ তে বলা হয়েছে যে—
(ক) এই বিধিতে বর্ণিত বিধান সাপেক্ষে, কোন সরকারী কর্মচারী সরকারের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে, নিকট আত্মীয় বা ব্যক্তিগত বন্ধু ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির নিকট হইতে এমন কোন উপহার গ্রহণ করিতে বা তাঁহার পরিবারের কোন সদস্যকে বা তাঁহার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তিকে উপহার গ্রহণের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন না, যাহার গ্রহণ সরকারী কর্তব্য পালনে উপহার দাতার নিকট তাঁহাকে যে কোনরূপ বাধ্যবাধকতায় আবদ্ধ করে। তবে যদি অনুচিত মনোকষ্ট প্রদান ব্যতিরেকে উপহারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান না করা যায়, তাহা হইলে উপহার গ্রহণপূর্বক নিষ্পত্তির সিদ্ধান্তের জন্য সরকারের নিকট হস্তান্তর করিতে হইবে।
তবে শর্ত থাকে যে, ধর্মীয় বা সামাজিক প্রথা অনুযায়ী যে সকল বিবাহ অনুষ্ঠান, বার্ষিকী, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপহারগ্রহণের রীতি প্রচলিত, ঐ সকল অনুষ্ঠানে দাপ্তরিক লেনদেনের সহিত সম্পৃক্ত নয়, এমন নিকট আত্মীয় বা ব্যক্তিগত বন্ধুর নিকট হইতে মাঝে মধ্যে উপহার গ্রহণ করা যাইবে। তবে উপহারের মূল্য ২৫,০০০/- (পঁচিশ হাজার) টাকার অধিক হইলে সরকারকে অবহিত করিতে হইবে।।
(খ) কোন উপহারগ্রহণ সরকারী কর্মচারীকে উপহার দাতার নিকট কোনরূপ সরকারী কর্তব্য পালনে বাধ্যবাধকতায় আবদ্ধ করে কী না, এই সম্পর্কে কোন প্রশ্ন উত্থাপিত হইলে, এই বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হিসাবে গণ্য হইবে।
(গ) বিদেশী রাষ্ট্র প্রধান বা প্রতিনিধি কোন উপহার প্রদানের প্রস্তাব করিলে উপহারদাতাকে কোনরূপ মনোকষ্ট প্রদান ব্যতিরেকে উপহারগ্রহণ এড়াইয়া যাওয়া সম্ভব হইলে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর তাহাই করা উচিত। যদি তাহা সম্ভব না হয়, তবে তিনি উপহার গ্রহণ করিবেন এবং নিষ্পত্তির আদেশের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে উপহারগ্রহণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিবেন।
( ঘ) সরকারের সচিব বা সমপদমর্যাদা সম্পন্ন কোন কর্মকর্তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বা বিদেশে কোন বিদেশী প্রতিষ্ঠান অথবা সমপর্যায়ের বা উচ্চ পর্যায়ের বিদেশী সরকারের কোন কর্মকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত সর্বাধিক পাঁচ হাজার টাকা। মূল্যের উপহার গ্রহণ করিতে পারিবেন। যদি গ্রহণকৃত উপহার সরকারী অফিস বা দপ্তর বা সরকারী বাস ভবনে ব্যবহার উপযোগী হয়, তাহা হইলে উহা তথায় ব্যবহার করিতে হইবে। যদি তথায় ব্যবহার সম্ভব না হয়, তবে সরকারী কর্মকর্তা উহা নিজের ব্যবহারের জন্য রাখিতে পারিবেন।
(ঙ) সরকারী কর্মচারী তাঁহার এখতিয়ারাধীন এলাকার কোন ব্যক্তি বা শিল্প প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোন সংস্থার পুনঃপুন অমিতব্যয়ী আতিথ্য অথবা পুনঃপুন আতিথ্য পরিহার করিবেন।
২। যৌতুক দেওয়া-নেওয়া বা যৌতুক দেওয়া-নেওয়ায় প্ররোচিত করা বা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যৌতুক দাবী করা। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-৫এ)
৩। রাষ্ট্রপতির অনুমতি ব্যতীত সরকারী কর্মচারী কর্তৃক বিদেশী পুরূস্কার, পদবী বা উপাধি গ্রহণ।(সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-৬)
৪। নিজের সম্মানে কোন সভা, নিজের প্রশংসার জন্য কোন বক্তৃতা অথবা নিজের সম্মানে আপ্যায়ন অনুষ্ঠান সংগঠনে উৎসাহ প্রদান। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-৭)
৫। কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদিত উন্নয়ন প্রকল্পের স্থানীয় অনুদান সংগ্রহে অংশ গ্রহণের এবং ফেমিন কোড ও ফেমিন ম্যানুয়েলের অধীন ত্রান কমিটির সদস্য হিসাবে তহবিল সংগ্রহে অংশ গ্রহণের ক্ষেত্র ব্যতীত অন্য যে কোন উদ্দেশ্যে সরকারের সুনির্দিষ্ট আদেশ ও নির্দেশ ব্যতিরেকে তহবিল সংগ্রহে অংশ গ্রহণ।(সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-৮ ও ৯)
৬। এখতিয়ারাধীন এলাকার বা অফিস সংক্রান্ত কার্যের সহিত সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির নিকট হইতে ঋণ গ্রহণ বা প্রদান বা নিজেকে আর্থিকভাবে দায়বদ্ধ করা। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-১০)
৭। (ক) বদলীর ক্ষেত্র ব্যতীত এবং প্রকৃত ব্যবসায়ীর সহিত সরল বিশ্বাসে লেনদেন ব্যতীত এখতিয়ারাধীন এলাকার কোন ব্যক্তির নিকট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে দুই লক্ষ টাকার অধিক মূল্যের স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির ক্রয়-বিক্রয় বা হস্তান্তর।
(খ) সরকারের অনুমোদন ব্যতীত বাংলাদেশের বাহিরে ক্রয়, বিক্রয়, দান, উইল বা অন্যভাবে সম্পত্তি অর্জন বা হস্তান্তর এবং বিদেশী সরকার বা সংস্থার সহিত কোন প্রকার ব্যবসায়িক লেনদেন। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-১১)
৮। প্রয়োজনীয় অর্থের উৎসের উল্লেখ পূর্বক এই উদ্দেশ্যে আবেদনের মাধ্যমে সরকারের পূর্বানুমতি গ্রহণ না করিয়া ব্যবসায়িক বা আবাসিক উদ্দেশ্যে নিজে বা ডেভলপারের দ্বারা কোন ইমারত, এপার্টমেন্ট বা ফ্লাট নির্মাণ বা ক্রয়। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-১২)
৯। চাকরিতে প্রবেশের সময় এবং প্রতি পাঁচ বৎসর ডিসেম্বর মাসে সরকারের নিকট নিজের ও পরিবারের সদস্যদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব দাখিল না করা। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-১৩)
১০। সরকারের চাহিদা অনুযায়ী লিক্যুয়িড এসেট এর হিসাব দাখিল না করা।(সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-১৪)
১১। নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে বিনিয়োগ-
(ক) ফটকা কারবারে:
(খ) যে বিনিয়োগের ফলে সরকারী কর্মচারী সরকারী কার্যসম্পাদনে প্রভাবান্বিত হইতে পারেন বা বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হইতে পারেন; এবং
(গ) কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যাহার মূল্যমানের পরিবর্তন সম্পর্কীত তথ্য সাধারণে জ্ঞাত নহে কিন্তু একজন সরকারী কর্মচারী হিসাবে তিনি জ্ঞাত, এইরূপ কিছুতে বিনিয়োগ। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-১৫)
১২। কোন ব্যাংক বা কোম্পানী স্থাপন, নিবন্ধীকরণ বা ব্যবস্থাপনায় অংশ গ্রহণ। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-১৬)
১৩। সরকারের পূর্বানুমতি ব্যতীত কোন ব্যবসায়ে বা অন্য কোন চাকরি বা কর্মে নিয়োজিত হওয়া। তবে ননগেজেটেড কর্মচারীগণ পরিবারের সদস্যদের শ্রমকে কাজে লাগানো যায়, এমন ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনা করিতে পারিবেন। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-১৭)
১৪। অভ্যাসগতভাবে ঋণ গ্রস্ত্য হওয়া বা দেউলিয়া হওয়া। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি -১৮)
১৫। সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত না হইয়া সরকারী দলিলাদি ও তথ্যাদি ফাঁস। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-১৯)
১৬। নিজের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার জন্য সংসদ সদস্য বা কোন বেসরকারী ব্যক্তির নিকট তদ্বির।(সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-২০)
১৭। সরকারের পূর্বানুমতি ব্যতীত কোন সংবাদ পত্র বা সাময়িকীর সম্পূর্ণ বা আংশিক মালিক হওয়া অথবা পরিচালনা বা ব্যবস্থাপনায় বা সম্পাদনায় অংশ গ্রহণ করা। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-২১)
১৮। শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও ক্রীড়া সম্পর্কীয় এবং প্রকৃত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্র ব্যতীত বিভাগীয় প্রধানের অনুমতি ব্যতিরেকে বেতার বা টেলিভিশন সম্প্রচারের কোন অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করিতে এবং কোন সংবাদ পত্র বা সাময়িকীতে নিজ নামে অথবা বেনামে বা অন্যের নামে কোন নিবন্ধ বা পত্র লেখা। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-২২)
১৯। নিজ নামে প্রকাশিত কোন দলিলাদিতে অথবা বেতার বা টেলিভিশন সম্প্রচারে অথবা জনসম্মুখে এমন কোন বক্তব্য বা মতামত প্রকাশ, যাহার ফলে—
(ক) সরকারের সংগে জনগণের কিংবা কোন শ্রেণী বিশেষের, অথবা
(খ) সরকারের সংগে বিদেশী রাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থার সম্মুখীন হইতে হয়। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-২৩)
২০। সরকারের পূর্বানুমতি ব্যতীত কোন পাবলিক কমিটির নিকট সাক্ষ্য প্রদান বা সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে সাক্ষ্য প্রদানের সময় সরকারের নীতি বা সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-২৪)
২১। নিম্নরূপ কার্যকলাপ—
(ক) কোন রাজনৈতিক দলের বা, রাজনৈতিক দলের কোন অঙ্গসংগঠনের সদস্য হওয়া বা অন্য কোনভাবে যুক্ত হওয়া অথবা দেশে বা বিদেশে কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করা বা কোন প্রকারে সহায়তা প্রদান করা।
(খ) কর্মচারীর তত্ত্বাবধায়াধীন, নিয়ন্ত্রণাধীন বা নির্ভরশীল কোন ব্যক্তিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকারের বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কাজে বা অনুরূপ আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করিতে বা যে কোন উপায়ে সহযোগিতা করার অনুমতি প্রদান। (গ) বাংলাদেশে বা অন্যত্র কোন আইন সভার নির্বাচনে অংশ গ্রহণ বা নির্বাচন প্রচারণায় অংশ গ্রহণ বা যে কোনভাবে প্রভাব খাটানো বা হস্তক্ষেপ করা। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-২৫)
২২। কর্তব্য পালনে ন্যায়পরায়নতার বিঘ্ন ঘটাইতে পারে বা প্রশাসনকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলিতে পারে বা বিশেষ কোন শ্রেণীর কর্মচারীদের বা সাধারণ জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাবের সৃষ্টি করিতে পারে, এইরূপভাবে কোন সাম্প্রদায়িক ধর্মমত প্রচার বা সাম্প্রদায়িক বিতর্কিত বিষয়ে অংশ গ্রহণ বা সাম্প্রদায়িক পক্ষপাতিত্ব এবং স্বজন প্রীতিকে প্রশয়দান। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-২৬)
২৩। সংকীর্ণতা, প্রিয়তোষণ, বেআইনীভাবে ক্ষতিগ্রস্তকরণ এবং ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-২৭)
২৪। মহিলা সহকর্মীদের প্রতি কোন প্রকারে এমন কোন ভাষা ব্যবহার বা আচরণ করা, যাহা অনুচিত, এবং অফিসিয়াল শিষ্টাচার ও মহিলা সহকর্মীদের জন্য মর্যাদার হানিকর। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-২৮)
২৫। (ক) নিকটাত্মীয়ের স্বার্থ জড়িত এমন কোন বিষয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট সিদ্ধান্তের জন্য প্রেরণ না করিয়া নিজে সিদ্ধান্ত প্রদান।
(খ) স্বামী/স্ত্রী কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য বা কোন প্রকারে কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সহিত সম্পৃক্ত হওয়া সত্ত্বেও তাহা তাৎক্ষণিকভাবে লিখিতভাবে সরকারকে অবহিত না করা। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-২৭বি)
২৬। সরকারের পূর্বানুমতি ব্যতীত সরকারী কার্যকলাপ ও আচরণের জন্য অবমাননাকর আক্রমনের বিরুদ্ধে সমর্থন লাভের জন্য আদালত বা সংবাদ মাধ্যমের আশ্রয় গ্রহণ।(সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-২৮)
২৭। নির্ধারিত শর্ত পূরণ করে নাই, এমন কোন চাকরিজীবি সমিতির সদস্য, প্রতিনিধি বা কর্মকর্তা হওয়া। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-২৯)
২৮। চাকরি সংক্রান্ত কোন দাবীর সমর্থনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকার বা কোন সরকারী কর্মচারীর উপর রাজনৈতিক বা অন্য কোন বহিপ্রভাব খাটানো বা খাটানোর চেষ্টা। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-৩০)
২৯। (ক) সরকারের বা কর্তৃপক্ষের কোন সিদ্ধান্ত বা আদেশ সম্পর্কে জনসম্মুখে আপত্তি উত্থাপন বা যে কোন প্রকারে বাঁধা প্রদান অথবা উক্তরূপ করার জন্য কোন ব্যক্তিকে উত্তেজিত বা প্ররোচিত করা;
(খ) সরকারের বা কর্তৃপক্ষের কোন সিদ্ধান্ত বা আদেশ সম্পর্কে জনসম্মুখে অসন্তোষ্টি বা বিরক্তি প্রকাশ অথবা উক্তরূপ করার জন্য প্ররোচিত করা অথবা কোন আন্দোলনে অংশগ্রহণ বা অন্যকে অংশগ্রহণে প্ররোচিত করা:
(গ) সরকারের বা কর্তৃপক্ষের কোন সিদ্ধান্ত বা আদেশ পরিবর্তন, সংশোধন বা বাতিলের জন্য অনুচিত প্রভাব বা চাপ প্রয়োগ; এবং
(ঘ) কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ্টি, ভুল বুঝাবুঝি বা বিদ্বেশের সৃষ্টি করা বা সৃষ্টির জন্য অন্যকে প্ররোচিত করা বা সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-৩০এ)
৩০। বিদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ সংগ্রহ বা বিদেশে প্রশিক্ষণের সুবিধা লাভের জন্য বিদেশী মিশন বা সাহায্য সংস্থার নিকট প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তদ্বির। (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-৩১)
৩১। (ক) সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত বিদেশী নাগরিকত্ব গ্রহণ।
(খ) কর্মচারীর স্বামী বা স্ত্রী বিদেশী নাগরিকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে তাহা সরকারকে অবহিত না করা। বিধি (সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি-৩১এ)
সংজ্ঞাটি পর্যালোচনায় দেখা যায় ইহাতে লিখিত এবং অলিখিত উভয় প্রকার আচরণকেই অন্তর্ভুক্ত করা হইয়াছে। পর্যালোচনায় দেখা যায় নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ অসদাচরণের অন্তর্ভুক্ত করা হইয়াছে–
(ক) সুশৃঙ্খলা বা চাকরি শৃঙ্খলার হানিকর আচরণ;
(খ) Government Servants (Conduct) Rules, 1979 এর কোন বিধানের পরিপন্থি কোন কাজ;
(গ) ভদ্রলোকের পক্ষে অনুচিত শিষ্টাচারহীন কোন কাজ;
(ঘ) উর্ধ্বতন কর্মকর্তার আইন সংগত আদেশ অমান্য করা;
(ঙ) কর্তব্যে চরম অবহেলা প্রদর্শন;
(চ) সরকারের কোন আদেশ, পরিপত্র এবং নির্দেশাবলী আইনসংগত কারণ ব্যতীত অবজ্ঞাকরণ; এবং
(ছ) কোন কর্তৃপক্ষের নিকট কোন সরকারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে নগ্ন, হয়রানিমূলক, মিথ্যা অথবা তুচ্ছ অভিযোগ সম্বলিত দরখাস্ত দাখিল।
"অসদাচরণ" সম্পর্কিত সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধান
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ২(খ)তে বলা হয়েছে "অসদাচরণ" অর্থ অসংগত আচরণ বা চাকুরী শৃঙ্খলার জন্য হানিকর আচরণ, অথবা সরকারি কর্মচারীদের আচরণ সংক্রান্ত বিদ্যমান বিধিমালার কোনো বিধানের পরিপন্থি কোনো কার্য, অথবা কোনো সরকারি কর্মচারীর পক্ষে শিষ্টাচার বহির্ভূত কোনো আচরণ, এবং নিম্নবর্ণিত আচরণসমূহও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা:-
(অ) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আইনসংগত আদেশ অমান্যকরণ;
(আ) কর্তব্যে অবহেলা প্রদর্শন;
(ই) আইনসংগত কারণ ব্যতিরেকে সরকারের কোনো আদেশ, পরিপত্র এবং নির্দেশ অবজ্ঞাকরণ;
(ঈ) কোনো কর্তৃপক্ষের নিকট কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে অসংগত, ভিত্তিহীন, হয়রানিমূলক, মিথ্যা অথবা তুচ্ছ অভিযোগ সংবলিত দরখাস্ত দাখিল; অথবা
(উ) অন্য কোনো আইন বা বিধি-বিধানে যে সমস্ত কার্য অসদাচরণ হিসাবে গণ্য হইবে মর্মে উল্লেখ আছে এইরূপ কোনো কার্য।
"অসদাচরণ" সম্পর্কিত বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর বিধান
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা-২৩(৪) বলা হয়েছে যে, নিম্নলিখিত কাজ করা অসদাচরণ বলিয়া গণ্য হইবে, যথা—
(ক) উপরস্থের কোন আইনসংগত বা যুক্তিসংগত আদেশ মানার ক্ষেত্রে এককভাবে বা অন্যের সঙ্গে সংঘবদ্ধ হইয়া ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্যতা;
(খ) মালিকের ব্যবসা বা সম্পত্তি সম্পর্কে চুরি, 2[আত্মসাৎ,] প্রতারণা বা অসাধুতা;
(গ) মালিকের অধীন তাঁহার বা অন্য কোন শ্রমিকের চাকুরী সংক্রান্ত ব্যাপারে ঘুষ গ্রহণ বা প্রদান;
(ঘ) বিনা ছুটিতে অভ্যাসগত অনুপস্থিতি অথবা ছুটি না নিয়া এক সঙ্গে দশ দিনের অধিক সময় অনুপস্থিতি;
(ঙ) অভ্যাসগত বিলম্বে উপস্থিতি;
(চ) প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য কোন আইন, বিধি বা প্রবিধানের অভ্যাসগত লঙ্ঘন;
(ছ) প্রতিষ্ঠানে উচ্ছৃংখলতা, দাংগা-হাংগামা, অগ্নিসংযোগ বা ভাংচুর;
(জ) কাজে-কর্মে অভ্যাসগত গাফিলতি;
(ঝ) প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত চাকুরী সংক্রান্ত, শৃঙ্খলা বা আচরণসহ, যে কোন বিধির অভ্যাসগত লঙ্ঘন;
(ঞ) মালিকের অফিসিয়াল রেকর্ডের রদবদল, জালকরণ, অন্যায় পরিবর্তন, উহার ক্ষতিকরণ বা উহা হারাইয়া ফেলা।
0 Comments