চাকরিতে নতুন কোটা পদ্ধতি
২৩ জুলাই ২০২৪ তারিখে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত/আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, স্ব-শাসিত ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের এবং বিভিন্ন কর্পোরেশনের চাকুরিতে/কর্মে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। উক্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে–
‘’নং-০৫,০০,০০০০১৭০১১.০১৪.২৪-১৪১-সরকার এই মর্মে আদেশ জারি করিতেছে যে, সমতার নীতি ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রজাতন্ত্রের কর্মে প্রতিনিধিত্ব লাভ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অর্থাৎ সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত/আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, স্ব-শাসিত ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের এবং বিভিন্ন কর্পোরেশনের চাকুরিতে/কর্মে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সকল গ্রেডে নিম্নরুপভাবে কোটা নির্ধারণ করা হইল-
(ক) মেধাভিত্তিক ৯৩%;
(খ) মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫%;
(গ) ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ১%; এবং
(ঘ) শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১%।
২। নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট কোটার শূন্য পদসমূহ সাধারণ মেধা তালিকা হইতে পূরণ করা হইবে।
৩। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা এর বিগত ০৪ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের পরিপত্র নং ০৫,০০,০০০০,১৭০,১১,০৭.১৮-২৭৬ সহ পূর্বে জারিকৃত এ সংক্রান্ত সকল পরিপত্র/প্রজ্ঞাপন/ আদেশ/নির্দেশ/অনুশাসন রহিত করা হইল।
৪। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হইবে।’’
কোটা পদ্ধতি নিয়ে দুটো কথা
(১) সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদের এখতিয়ারবলে সংবিধানের ১৯, ২৭, ২৮(৪), ২৯(১) ও ২৯(৩) অনুচ্ছেদে থাকা সমতার নীতি ও অনগ্রসর জনোগোষ্ঠীর প্রজাতন্ত্রের কর্মে প্রতিনিধিত্ব লাভ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সকল গ্রেডে(৯ম–২০তম) অর্থাৎ ১ম,২য়,৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর চাকরিতে কোটা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, চাকরিতে ৯ম—১৩তম গ্রেডে (১ম ও ২য় শ্রেণি) মোট ৫৬% কোটা প্রথা ২০১৮ সালে বাতিল করা হয় কিন্তু ১৪তম—২০তম গ্রেডে (মূলত ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি) কোটা ব্যবস্থা চালু ছিল।
(২) বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদের (১১তম গ্রেড) নিয়োগে ৬০% নারী কোটা, বাংলাদেশ রেলওয়েতে ১৪তম—২০তম গ্রেড পর্যন্ত ৩০% পোষ্য কোটা এবং বিভিন্ন সেক্টর ও করপোরেশনের নিয়োগবিধি অনুযায়ী বিভিন্ন কোটা পদ্ধতি কার্যকর আছে। এমন কি ০৩ পার্বত্য জেলার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য আলাদা কোটার ব্যবস্থাও রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কোটা আগামীতে কীভাবে নির্ধারিত হবে, তা নিয়ে অস্পষ্টতা এখনও রয়ে গেছে। তবে ২০১৮ সালে সরকার যখন সব কোটা বাতিল করে, তখনও প্রাথমিক শিক্ষকের ৬০% নারী কোটা ও রেলের নিয়োগে পোষ্য কোটা বলবৎ ছিল। কারণ এসব বিশেষ কোটা সংশ্লিষ্ট নিয়োগবিধির মাধ্যমে কার্যকর হয়। আবার একথা সত্য যে, পরিপত্র দিয়ে কখনও আইন বা বিধি বাতিল করা যায় না। তাই বলা যায় যে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রেলওয়েতে, পার্বত্য জেলার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আলাদা কোটা পদ্ধতি কার্যকর থাকবে বলে মনে হয়।
0 Comments